Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ঘটনাপুঞ্জ

নাসির শেখ, পিতা-মৃত আব্দুল হক, মাতা-হেনা বেগম, গ্রাম-হরিদাসপুর পূর্বপাড়া, গোপালগঞ্জ সদর, গোপালগঞ্জ। তিনি একটি কোম্পানীর পরিবহন গাড়ীর চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০১ সালে একদিন সকাল বেলা তিনি গাড়ী নিয়ে গোপালগঞ্জ হতে ঢাকা যাওয়ার পথে হঠাৎ  গাড়ীর ব্রেক ফেল করে দুঘর্টনায় পড়ে। দুর্ঘটনায় অনেক লোক আহত হয়। তিনি আহত হয়ে কোন রকম জানে বেচে যান। কিন্তু পরবর্তীতে তার বাম পা কেটে  ফেলতে হয়। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তিনি তার সহায় সম্বল সব হারিয়ে ফেলেন। সহায় সম্বল সব হারানোর কারনে তিনি দিশে হারা হয়ে পড়েন। একই কারনে তার মেয়েদের লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে যায়। কিভাবে তার সংসার চলবে কিভাবে মেয়েদের লেখাপড়া হবে কিছুই তিনি ভেবে পাচ্ছিলেন না,  এই ভাবে তার প্রায় ৪টি বছর কেটে যায়। এমতাবস্থায় এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে, সমাজসেবা অধিদফতর হতে প্রতিবন্ধীদের জন্য সুদ মুক্ত ঋণ প্রদান করা হয়। তখন তিনি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করেন  এবং  উপজেলা সমাজসেবা অফিস হতে ২০০৪ সালে  প্রথম পর্যায়ে ১০০০০/-(দশ হাজার) টাকা ঋণ গ্রহণ করে তার বসত বাড়ীর সামনে রাস্তার পার্শ্বে ছোট একটি ঘর তৈরি করে মুদি মালের দোকান দেন। প্রথম দিকে দোকানে তেমন একটা বেচাকেনা হতো না। ধীরে ধীরে বেচাকেনা বাড়তে থাকে। তিনি উক্ত ঋণের টাকা পরিশোধ করে পুনরায় ২০০৬ সালে ১০০০০/-(দশ হাজার) টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। পূর্বের লাভের টাকা সহিত পুনঃ গ্রহণকৃত ঋণের টাকা যোগ করে তিনি মুদিখানা ব্যবসাকে আরও  প্রসারিত করেন। দিন দিন তার বেচাকেনা বাড়তে থাকে। উক্ত দোকানের আয় থেকে তিনি সংসার চালান এবং মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ বহন করেন। এই ভাবে তিনি ২০১৪ সাল পর্যন্ত সমাজসেবা অফিস থেকে ঋণ গ্রহণ করে নিয়মিত পরিশোধ করেন। ২০১৪ সালে তার ব্যবসাকে আরও প্রসারিত করার লক্ষে ঋণের পরিমান বৃদ্ধির জন্য উপজেলা সমাজসেবা অফিসার বরাবর আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার তাকে ১০০০০/- টাকার স্থলে ২০০০০/-(বিশ হাজার) টাকা ঋণ প্রদান করেন। উক্ত ঋণের টাকা দিয়ে তিনি মুদিখানা দোকানের পাশাপাশি তার এক নিকট আত্নীয়র সহিত যৌথভাবে গাড়ীর যন্ত্রাংশর ব্যবসা শুরু করেন। সমাজসেবা অধিদফতর হতে প্রদান কৃত ঋণের টাকা দিয়ে ব্যবসা করে তিনি তার বসত বাড়ীতে একটি আধাপাকা ঘর তৈরি করেন এবং  মাঠে  ১০ শতাংশ জমি ক্রয় করে জমিতে শাকসবজির চাষ করেন। শাকসবজি বিক্রি করেও তার কিছু বাড়তি আয় হয় । সমাজসেবা অধিদফতরের সহযোগিতায় তিনি মেয়েদেরকে এইচ এসসি পর্যন্ত পড়াশুনা করিয়ে  ভাল পরিবারে বিবাহ দিতে পেরেছেন।  সমাজসেবা অধিদফতর হতে তিনি ঋণগ্রহণ করে  তার দুঃখ কষ্টের জীবন থেকে তিনি সুখী সুন্দর জীবন ফিরে পেয়েছেন এবং বর্তমানে তিনি  এলাকায় একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। সমাজসেবা অধিদফতরের সহযোগিতায় তার কষ্টের জীবন দুর হয়ে সুখী জীবন ফিরে পাওয়ায় তিনি সমাজসেবা অধিদফতর, গোপালগঞ্জ এর নিকট চির কৃতজ্ঞ । বর্তমানে তিনি স্ত্রী, সন্তান নিয়ে সুখে জীবন যাপন করছেন।